মানবপাচারকারী একই চক্রের দুই চীনা নাগরিককে গ্রেফতার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গতকাল সোমবার পৃথক দুই অভিযানে তাদের গেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত চীনা নাগরিক দুজন হলেন- ফ্যান গোউয়ে (২৭) ও ইয়াং জিকু (২৫)। আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এপিবিএন জানায়, চাঁদপুর জেলার সুবর্ণা আক্তার (২১) নামে এক ভুক্তভোগীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি প্রথমে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের নজরে আসে।
গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাচারকালে তিনি পালিয়ে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে চলে আসেন এবং জানান, ফ্যান গোউয়ে তাকে চীনে পাচারের চেষ্টা করছে। সে বর্তমানে চীন যাওয়ার উদ্দেশ্যে এয়ারপোর্টে অবস্থান করছে। অভিযোগকারীর তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনিতা রানী সূত্রধর তার সহযোগী ফোর্সসহ বোর্ডিং লাউঞ্জ-৫ এ অভিযুক্ত চীনা নাগরিককে অভিযোগকারীর সহায়তায় শনাক্ত এবং আটক করেন।
পরে ইমিগ্রেশন থেকে অফলোড করণপূর্বক অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দুজনকেই এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়। অভিযুক্তের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে ও ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, নিকুঞ্জের একটি তিনতলা বাড়িতে আরও দেশি বিদেশি পাচারকারী ও নারী ভুক্তভোগী অবস্থান করছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে গতকাল গভীর রাতে সিআইডির টিএইচবি সেল, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা ও এয়ারপোর্ট এপিবিএনের একটি চৌকস দল নিকুঞ্জের সেই বাড়িতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। সেখান থেকে তারা ইয়াং জিকু (২৫) নামে আরেকজন চীনা পাচারকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাকিরা পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ পাচারকারী চক্রের গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মানবপাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ মিলেছে। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সূত্র জানায়, গত ২ বছর আগে টিপু এবং জিহাদ নামে দুই জনের সঙ্গে ভুক্তভোগীর ফেসবুকে বন্ধুত্ব হয়। তাদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ফেসবুক-মেসেঞ্জারে কথা হতো।
কথাবার্তার এক পর্যায়ে জিহাদ তাকে চাইনিজ কোম্পানিতে চাকরির প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে রাজি হলে টিপু এবং জিহাদ গত অক্টোবরের ২৬ তারিখ ভিক্টিমের নিজ বাড়ি থেকে তাকে ঢাকা নিয়ে আসে।