বিনা দুষে ৬ বছর আদালতে ঘুরছেন দিনমজুর, মূল আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে

শেরার করুন

জিহাদ মিয়া

ক্রাইম প্রতিনিধি

কথায় বলে নামে নামে যমে টানে। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে। ছয় বছর আগে মাদক মামলার আসামি মাহাবুবের জায়গায় দিনমজুর মাহাবুলকে ধরে আদালতে চালান দেয় পুলিশ। তবে নামের ভুলের বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় ১৩ দিন জেলে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান মাহাবুল। এর পর একে একে কেটেছে অর্ধযুগ কিন্তু নিরাপরাধ দিনমজুর মাহাবুলের ভোগান্তি কমেনি। এখনও তাকে সেই মামলায় নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে।

দিনমজুর মাহাবুলকে ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানার এসআই মেজবাহুর রহমান আটক করেছিলেন।

দিনমজুর মাহাবুল (২৮) মহেশপুর উপজেলার মাইলবাড়িয়া পশ্চিমপাড়ার শাহার আলমের ছেলে। অন্যদিকে, মাদক মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামির নাম মাহাবুব হোসেন। তার বাবার নাম আলী বক্র। তার বাড়িও একই গ্রামে। আসামি মাহাবুব এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।

আসামি এবং দিনমজুর দুজনের নিজের নামের মিল থাকলেও তাদের বাবা ও মায়ের নাম আলাদা। তবে পরিবারের অভিযোগ, গ্রেফতারের সময় মাহাবুলের পরিবার ও এলাকাবাসীর কারও কোনো কথাই শোনেনি এসআই মেজবাহুর রহামান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৯ নভেম্বর দুপুরের দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ইশ্বরচন্দ্রপুর এলাকা থেকে ১০০ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিলসহ মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে শুকুর আলীকে আটক করে বিজিবি। সেই মামলায় পলাতক দেখানো হয় নাটোর জেলার জয়কেষ্টপুর গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে আজবার আলী ও মহেশপুর উপজেলার মাইলবাড়িয়া গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মাহাবুব হোসেনকে। বিজিবির দর্শনা কোম্পানি হাবিলদার শওকত আলী ছিলেন মামলার বাদী।

ফেন্সিডিলসহ আটক হওয়া শুকুর আলী বলেন, আমি মাদকগুলো টাকার বিনিময়ে বহন করছিলাম। এগুলোর আসল মালিক ছিল মাইলবাড়িয়া গ্রামের মাহাবুব হোসেন। কিন্তু এ মামলায় যে মাহাবুলকে পুলিশ ধরেছে তাকে আমি চিনি না।

স্থানীয় আজিজুর রহমান বলেন, মাহাবুল দিনমজুর, তিনি কোনদিন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল না । আমাদের গ্রামে একজন মাদক ব্যবসায়ী আছে তার নাম মাহাবুব হোসেন। তিনি বলেন, মাহাবুল নিরীহ মানুষ, কিন্তু নামের ভুলে ১৩ দিন জেলে থাকতে হয়েছে। এখনও তাকে হাজিরা দিতে হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান বলেন, আমাদের গ্রামে মাহাবুব নামে ৪ থেকে ৫ জন আছে।