
মোঃ রেজাউল করিম
ময়মনসিংহ।
“হে বিশ্বাসীগণ!তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হল, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য দেওয়া হয়েছিল,যাতে তোমরা সংযমশীল হতে পার। – সূরা আল-বাকারা:২:১৮৩ আয়াত।
*রমজানের গুরুত্ব:-
রমাযান মাস- যার মধ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে লোকেদের পথ প্রদর্শক এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনারূপে এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে,কাজেই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে,সে যেন এ মাসে রোযা পালন করে, আর যে পীড়িত কিংবা সফরে আছে,সে অন্য সময় ঐ সংখ্যাগুলো(অর্থাৎ রোজা)পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান,যা কষ্টদায়ক তা চান না যেন তোমরা মেয়াদ পূর্ণ করতে পার,আর তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মাহাত্ম্য ঘোষণা কর, আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার। – সূরা আল-বাকারা ২:১৮৫ আয়াত।
*তারাবীহ সালাত সম্পর্কিতঃ- হাদিস- ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ)আবু হুরাইরা(রাঃ) হতে বর্ণিত-তিনি বলেন,
“আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে রমজান সম্পর্কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় কিয়াম (তারাবীহ)আদায় করবে,তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে।”(সহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ ২৪, তারাবীহর সালাত)
*সেহরী সম্পর্কে হাদিসঃ-
– আনাস ইবনু মালিক(রাঃ)হতে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “তোমরা সেহরী গ্রহণ করো, কেননা এতে বরকত রয়েছে।” – (সহীহ আল-বুখারী ১৯২৩,বই ৩২,হাদিস-৩২)
*ইফতারঃ-
হজরত সাহল ইবনে সাআদ (রা.) বর্ণনা করেন-রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,‘যত দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে,তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে।’(বুখারি,সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩৩)।
রাসুলুল্লাহ(সা.) বলেন- ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দ্বারা; নিশ্চয়ই পানি পবিত্র।’(তিরমিজি ও আবু দাউদ; আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)।
*ইফতার করানোর ফজিলতঃ-
®রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন-‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে,সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে এবং রোজাদারের সওয়াবের সমপরিমাণ সওয়াব সে লাভ করবে। তবে ওই রোজাদারের সওয়াব কম করা হবে না।’
*মর্যাদাপূর্ণ রাত্রিঃ-
(লাইলাতুল কদর) হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। – সূরা আল-কাদর, 97:3
হাদিসে -‘আয়িশাহ্ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিতঃ-তিনি বলেন,আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করতেন এবং বলতেনঃ তোমরা রমাযানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর,অর্থাৎ এই রজণী কে তালাশ করো।সহীহ বুখারী (তাওহীদ) | অধ্যায়ঃ ৩২/ লাইলাতুল ক্বদর-এর ফাযীলাত: হাদিস নং: 2020.
*সদাকাতুল ফিতর (ফিতরা) – ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত:
তিনি বলেন-রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোজাদারের অশ্লীল কথাবার্তা ও অপ্রীতিকর আচরণ থেকে পবিত্রকরণের জন্য এবং মিসকিনদের আহারের সংস্থান করার জন্য সদাকাতুল ফিতর (ফিতরা) নির্ধারণ করেছেন। ঈদের সালাতের পূর্বে এটি আদায় করা উত্তম।
আবু দাউদ ১৬০৯, সহীহ বুখারী ১৫০৩,সহীহ মুসলিম ৯৮৪, ইবনে মাজাহ ১৮২৭, সহীহ ইবনে খুযাইমাহ ২৩৪১)
পরিশেষে এই পবিত্র,আল্লাহ যেন রমজান উক্ত-হাদিসগুলো আমল করার তৌফিক দেন। আমরা যেন নিজেকে পরিশুদ্ধি করে। তাকওয়া অর্জন করে। খাঁটি মুসলমানরূপ আল্লাহর বিধান পরিপূর্ণ মেনে চলে জীবন যাপন করতে পারি। এটাই হোক আমাদের জীবনে রমজানের মূল শিক্ষা।
আমিন!!
(তথ্য সংগ্রহেঃভুলত্রুটি ক্ষমা মার্জনীয়)