সুনামগঞ্জে কোরআন অবমাননার অভিযোগে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা, কী ঘটেছিল?

শেরার করুন

বিপ্লব আহাম্মেদ
প্রতিনিধি ঢাকা
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এক হিন্দু যুবকের কোরআন অবমাননার অভিযোগকে ঘিরে ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মংলারগাঁও গ্রামের যুবক, সামাজিক মাধ্যমে কোরআন অবমাননা করেছে এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকার মুসলমান সম্প্রদায়ের অনেকে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এসময় কয়েকটি বাড়িঘর-দোকানপাটে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এসময় একটি মন্দিরের একাংশে ভাঙচুরের অভিযোগও পাওয়া গেছে। এই ঘটনার পরপরই মঙ্গলবার রাতেই কোরআন অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত ওই যুবককে আটক করে পুলিশ। দোয়ারাবাজার থানার ওসি, মো. শামসুদ্দিন জানিয়েছেন, “যেই যুবক কোরআন অবমাননার এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাকে আমরা আটক করেছি। এখন এলাকার পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে।”
মঙ্গলবার রাতে ওই ঘটনার বুধবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শান্তি সমাবেশ করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় পরিবেশ শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনু বলেন, “কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাটে কিছু ভাঙচুর হয়েছে। এ ঘটনায় সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ফেসবুকে এটি নিয়ে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে কেউ কেউ।” ওই এলাকায় কোরআন অবমাননার অভিযোগে আটককৃত ওই হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। যেখান থেকে ঘটনার শুরু সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় মংলারগাও গ্রামের এক যুবক মঙ্গলবার একটি ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে কোরআন অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে একটি স্ক্রিনশটের সাথে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই যুবকের ছবিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনার পর সন্ধ্যার দিকে দোয়ারাবাজার স্কুল মাঠে জড়ো হতে থাকেন স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজন। এবং তারা বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকে। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী আসে।
এলাকা থেকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে ওই যুবককে আটক করে প্রথমে দোয়ারা বাজার থানায় নিয়ে আসা হয়। দোয়ারা বাজার থানার ওসি মো. শামসুদ্দিন বলেন, “এই বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ খবর পেয়ে ওই যুবককে এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে বিক্ষোভ বাড়তে থাকায় তাকে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে নিয়ে যাওয়া হয়।” পুলিশ জানায়, স্থানীয় বিক্ষোভকারী খবর পেয়ে থানায় যাওয়ার আগেই তাকে জেলা সদরে নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। হামলা-ভাঙচুর সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছেসন্ধ্যার পর থেকে যখন কোরআন অবমাননার অভিযোগে মুসলমান সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা বিক্ষোভ করছিল সে সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মঙ্গলবার রাত থেকে অনেককে পোস্ট দিতে দেখা যায়।