
স্টাফ রিপোর্টার,ঢাকা
ফসলের মাঠ নয়, যেন হলুদ রঙের দিগন্তজোড়া গালিচা। হাওড়, নদ-নদী চর-অধ্যুষিত এলাকা আর খাল-বিল পাড়ের বাতাসে ম-ম সুবাস। ‘ফাউ’ ফসল সরিষার খেত এখন ফুলে ফুলে ভরা। কিষান-কিষানির মুখে তৃপ্তির হাসি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, কিশোরগঞ্জে হাতছানি দিচ্ছে সরিষা ফসলের ভালো ফলন। সেটি হলে পূরণ হবে আবাদের লক্ষ্যমাত্রাও।
সূত্রমতে, এ নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে বাড়ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের আনাগোনা। প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধান ও অন্য খাদ্যশস্য উৎপাদন করে ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এ অঞ্চলের কৃষকেরা অল্প সময়ে ও অল্প খরচে উৎপাদিত বেশি দামে বিক্রিযোগ্য ফসল সরিষা ব্যাপক হারে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ভোজ্য তেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে এ ফসলটির উপযুক্ত মূল্যও রয়েছে বাজারে।
প্রতি বছর কার্তিক মাসের শেষের দিকে চাষ হয় সরিষা ফসল। পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তোলা হয়। বিশেষ করে হাওড় অঞ্চলে বোরো ফসল কাটা শেষে নিম্নাঞ্চলের জমিগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। কার্তিক মাসের দিকে পানি সরে গেলে আরেকটি বোরো ফসলের মৌসুম শুরুর মাঝ সময়ে চাষ হয় তেলজাতীয় এ রবি ফসল। এজন্য চাষিরা এটিকে ‘ফাউ’ ফসল হিসাবে গুরুত্বের সঙ্গে চাষ করে থাকে।
এ ছাড়া সরিষা ফুল দিয়ে মুখরোচক বড়া ও পাতা শাক হিসাবে রান্না করা হয়। ফসল তোলা হলে সরিষা গাছের কাণ্ড শুকিয়ে ব্যবহার করা হয় জ্বালানি হিসাবে। এসবের কারণেও মেলে বাড়তি অর্থ। বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হয় সরিষা।
কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, অন্তর্বর্তী সময়ে নামমাত্র খরচে চাষ করে উপযুক্ত দাম পাওয়ায় কৃষকরা অধিক হারে সরিষা আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। এ বছর কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৩ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। আশা করি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।